সিমটেক্সের বিরুদ্ধে বিএসইসিতে ভুয়া সংগঠনের চিঠি দেওয়ার অভিযোগ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে একটি ভুয়া সংগঠন থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী কল্যাণ ফোরাম’ নামের একটি সংগঠনের প্যাড ছাপিয়ে এ চিঠি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন সিমটেক্সের সচিব সাইখ বিন আবেদীন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের তিনি জানান, ‘পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী কল্যাণ ফোরাম’ নামের অস্তিত্বহীন সংগঠনের প্যাড ছাপিয়ে যে ঠিকানা উল্লেখ করে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সরেজমিনে সংগঠনের কোনো চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া প্যাডে ১০ ডিজিটের ভুয়া ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
সাইখ বিন আবেদীন বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের নামে যেসব সংগঠন আছে, সেখানে ‘পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী কল্যাণ ফোরাম’ নামের কোনো সংগঠনের কথা কখনো শুনিনি। কিন্তু হুট করে গত ২৮ আগস্ট এই অস্তিত্বহীন সংগঠনটি মনগড়া দাবি তুলে বিএসইসিতে সিমটেক্সের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধানে বিএসইসিতে দাখিল করা অভিযোগের প্যাডে উল্লিখিত সংগঠনের মতিঝিল এলাকার ঠিকানায় সরেজমিনে গিয়ে অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং ওই ঠিকানার বিষয়েও কেউ বলতে পারেননি। এছাড়া দুটি ফোন নম্বর উল্লেখ করা হলেও একটি ১০ ডিজিটের। আরেকটি নম্বরে ফোন গেলেও কেউ ধরছেন না।
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের সচিব বলেন, কুচক্রীমহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ওই অস্তিত্বহীন সংগঠনটি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান বিএসইসিতে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে মনগড়া ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন। আর্থিক অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সিমটেক্স থেকে বিতাড়িত সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আগেও বিভিন্ন সময় সিমটেক্সের ক্ষতি ও সুনাম নষ্টের চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, গত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে তিনি (আনিসুর রহমান) রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বিএসইসিতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সিমটেক্সের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে তার মনোনীত ব্যক্তিদের মাধ্যমে কোম্পানি দখলের অপচেষ্টা করেন। যদিও পরবর্তীসময় আদালত ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার শুনানি শেষে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত না হওয়ায় সিমটেক্সের পরিচালনা পর্যদ বজায় রাখা হয়।
সাইখ বিন আবেদীন বলেন, বিএসইসিকে দেওয়া চিঠিতে পি কে হালদারের সঙ্গে সিমটেক্সের উদ্যোক্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলা হয়। অথচ ছিদ্দিকুর রহমান কোনোভাবেই প্রশান্ত কুমার হালদারের সহযোগী নন। এ নিয়ে দুদক কর্তৃক মামলার সমস্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে পি কে হালদারের সঙ্গে ছিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার কোনো সুস্পষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় ওই মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এছাড়া বিএসইসিতে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে দাখিল করা অভিযোগে কিছু কোম্পানির সঙ্গে সিমটেক্সের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলা হয়েছে। বাস্তবে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সিমটেক্সের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ আলাদা ও পৃথক সত্তা। এছাড়া ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও আলাদা। সব নিয়ম পরিপালন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এক্সেল ফার্মগানিক লিমিটেড ও আর্কটারাস লিমিটেডের মনোনীত পরিচালক সিমটেক্সের পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত আছে। অথচ বিএসইসিতে দেওয়া অভিযোগে সব প্রতিষ্ঠানকে এককরে ফেলা হয়েছে। এছাড়া ছিদ্দিকুর রহমান এবং নিয়াজ রহমান সাকিব কখনো আর্কটারাস লিমিটেডের পরিচালক ছিলেন না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট- বলে দাবি করেন সিমটেক্সের সচিব।
তিনি বলেন, ভুয়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে বিএসইসিতে অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ তারা কখনো কোনো দাবি নিয়ে সিমটেক্সে আসেননি। কোনো ব্যক্তি বা পরিচালকের সঙ্গেও কথা বলেননি। ভুয়া সংগঠনটি মনগড়া বক্তব্য দিয়ে কোম্পানির সুনাম এবং ব্যবসায়িক ক্ষতি করতে বিএসইসিতে চিঠি দিয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor
কমেন্ট বক্স